নেশন হান্ট ডেস্ক: বর্তমান সময়ে দিন যত এগোচ্ছে ততই বাড়ছে অনলাইন জালিয়াতির ঘটনা (Online Scam)। এমনকি, জালিয়াতির জন্য একের পর এক নিত্যনতুন কৌশল অবলম্বন করছে প্রতারকরা। সেই রেশ বজায় রেখেই এবার তারা সিম সোয়াপিংয়ের (Sim Swapping) কৌশল ব্যবহার করে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খালি করছে। চলতি মাসের শুরুতেই উত্তর দিল্লির একজন আইনজীবী রাজধানীতে এইভাবে জালিয়াতির শিকার হন। জানা গিয়েছে, তিনি অজানা নম্বর থেকে তিনটি মিস কল পেয়েছিলেন এবং পরবর্তীকালে তাঁর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে সমস্ত টাকা কয়েক মিনিটের মধ্যেই তুলে নেওয়া হয়েছিল।
এদিকে, এই একই ধরণের ঘটনা ফেব্রুয়ারিতেও দেখা গিয়েছিল। সেই সময়ে একটি বেসরকারি স্কুলের একজন শিক্ষক তিন ঘণ্টারও কম সময়ে আটটি ট্রানজাকশনে প্রায় ১.৫ লক্ষ টাকা হারিয়েছিলেন। এই প্রসঙ্গে ওই শিক্ষক জানান যে, তিনি কারও সাথে কোনো কল, টেক্সট বা ব্যাঙ্ক ওটিপি শেয়ার করেননি। তিনি শুধুমাত্র মিসড কল পেয়েছিলেন এবং পরে তাঁর অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা কেটে নেওয়া হয়েছিল।
দিল্লি পুলিশের মতে, এই সমস্ত ঘটনাগুলি স্পষ্ট হয়েছে যে, ভুক্তভোগীরা প্রথমে প্রতারকদের কাছ থেকে একাধিক মিসড কল পান। তারপরেই অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা কেটে নেওয়া হয়। এখন অনেকেই জানতে চান যে, কিভাবে মিসড কলের মাধ্যমে এহেন কেলেঙ্কারি সম্ভব? কিভাবেই বা সিম সোয়াপিং ঘটে? বর্তমান প্রতিবেদনে এই প্রসঙ্গে বিস্তারিত তথ্য উপস্থাপিত করা হল।
সিম সোয়াপিং: এটি এমন একটি প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে স্ক্যামাররা আপনার সিম কার্ডের একটি ডুপ্লিকেট সিম তৈরি করে এবং সেটির ওপর সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ রাখে। সহজ কথায়, সবার আগে আপনার ডিজিটাল আইডেন্টিটি চুরি হয়ে যায়। তারপরে প্রতারকরা প্রথমে আপনার বন্ধু এবং পরিবারের সদস্যদের শনাক্ত করে তাঁদের ফাঁদে ফেলার চেষ্টা করে। এর মাধ্যমে, প্রতারকরা অনলাইন ব্যাঙ্কিং এবং সোশ্যাল মিডিয়া সহ সমস্ত প্রোফাইলের ওপর সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ রাখে।
আরও পড়ুন: করেছেন ৩০ হাজার কোটির স্ক্যাম, হয়েছে ওয়েব সিরিজও, এই ব্যক্তির কীর্তি জানলে হয়ে যাবেন “থ”
সিম সোয়াপিং কেলেঙ্কারিতে, প্রতারকরা প্রথমে ফিশিং বা ভিশিংয়ের সাহায্যে ফোন নম্বর, ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের বিবরণের মতো ব্যক্তিগত বিবরণ পেয়ে যায়। ফিশিং হল এমন একটি কৌশল যেখানে প্রতারকরা মেল বা বার্তার মাধ্যমে ম্যালওয়্যার লিঙ্ক পাঠায়। একবার লিঙ্কটি খোলা হলে, ম্যালওয়্যারটি সমস্ত ব্যক্তিগত তথ্য চুরি করে।
আরও পড়ুন: মাত্র ৪ ঘণ্টা কাজ করলেই হবে, শীতকালে বাড়িতে বসেই আয় করুন লাখ লাখ টাকা
এই প্রসঙ্গে একজন পুলিশ আধিকারিক গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন যে, প্রতারকরা সাধারণত টেলিকম কোম্পানির সাথে কাজ করে। অতএব, তারা সহজেই ম্যালওয়্যার বা ফিশিং আক্রমণের পরে প্রাপ্ত বিবরণ সহ সিমটি নকল করে। একবার তাদের ডুপ্লিকেট সিম থাকলে, তারা সহজেই যেকোনো ব্যাঙ্কের বার্তা বা ওটিপি সহজেই পেতে পারে।
কিভাবে এই প্রতারণা থেকে নিজেকে রক্ষা করবেন: আপনি কিছু সহজ পদক্ষেপ অনুসরণ করে এই স্ক্যাম এড়াতে পারেন।
১. প্রথমেই কোনো অজানা লিঙ্কে ক্লিক করবেন না।
২. একাধিক মিসড কল পাওয়ার পর এই ধরণের বার্তা উপেক্ষা করা বা আপনার ফোন বন্ধ করা উচিত নয়।
৩. ফোনে এই ধরণের কোনো কার্যকলাপ ঘটলে তাৎক্ষণিকভাবে মোবাইল অপারেটরের কাছে খোঁজ খবর নিন।
৪. নির্দিষ্ট সময় অন্তর আপনার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের পাসওয়ার্ড পরিবর্তন করতে থাকুন।
৫. SMS-এর পাশাপাশি, ব্যাঙ্কিং লেনদেনের জন্য আপনার ই-মেইল অ্যালার্টও চালু রাখা উচিত।