নেশন হান্ট ডেস্ক: বৃষ্টি হলেই শহর কলকাতা (Kolkata) জুড়ে রাস্তার যে বেহাল অবস্থা ঘটে সেই চিত্র আমরা প্রত্যেকেই প্রত্যক্ষ করেছি। এমনকি, বর্ষার দিনগুলিতে রীতিমতো তুমুল জল যন্ত্রণার সম্মুখীন হতে হয়ে শহরবাসীকে। শুধু তাই নয়, এর ফলে একদিকে যেমন যানবাহনের গতি শ্লথ হয়ে যায় অন্যদিকে বৃদ্ধি পায় দুর্ঘটনার আশঙ্কাও। এদিকে, যেহেতু বর্ষার পরেই উৎসবের মরশুম শুরু হয়ে যায় তাই তার আগেই দ্রুত রাস্তা সারাইয়ের কাজ সম্পন্ন করে পুরসভা।
যদিও, এতে স্থায়ী কোনো সমাধান ঘটে না। বরং, কয়েকমাস যাওয়ার পর আবার পূর্বের পরিস্থিতি ফিরে আসে। আর এইভাবেই বছরের পর বছর ধরে শহরের বাসিন্দাদের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। তবে, এই সমস্যা সমাধানের জন্য দীর্ঘদিন ধরে এর থেকে স্থায়ী সমাধানও খুঁজছে পুরসভা। সেই আবহেই এবার একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সামনে এসেছে। পাশাপাশি, মিলতে পারে এই সমস্যা থেকে মুক্তির সমাধান সূত্রও!
উল্লেখ্য যে, চলতি বছরে পুজোর আগে শহরের রাস্তা মেরামতির বিষয়টা খতিয়ে দেখতে কলকাতার রাস্তা কার্যত চষে ফেলেছিলেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম। পাশাপাশি, তাঁর সঙ্গে ছিলেন কলকাতা পুরসভার আলো বিভাগের মেয়র পরিষদ সন্দীপ রঞ্জন বক্সী সহ সড়ক বিভাগের মেয়র পরিষদ অভিজিৎ মুখোপাধ্যায় এবং সংশ্লিষ্ট বিষয়ক বিভাগের পুরসভার ডিজি এবং আধিকারিকরাও।
আরও পড়ুন: স্বপ্নপূরণের জন্য ছেড়েছিলেন ব্যাঙ্কের চাকরি! কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে পরীক্ষায় সফল হয়ে SDM হলেন অমিত
এমতাবস্থায়, জানা গিয়েছে যে, ইকবালপুর সংলগ্ন ডায়মন্ড হারবার রোডের একটি অংশে এবার ওয়াটারপ্রুফ রাস্তা তৈরি করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। শুধু তাই নয়, ওই রাস্তার যে অংশে প্লাস্টিক গুলিয়ে পিচের সঙ্গে সংমিশ্রণ করে রাস্তা তৈরি করা হচ্ছে সেখানে এবার পৌঁছে যান মেয়র। মূলত, নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় বিটুমিন, স্টোন চিপস আর বালির সঙ্গে প্লাস্টিকের গ্রেনিউলস মিশিয়েই তৈরি করা হচ্ছে উপাদান।
আরও পড়ুন: আর হবে না চিকিৎসার সমস্যা, এবার বাংলার মানুষের জন্য এই মানবিক পদক্ষেপ নিল সরকার! খুশি জনতা
উল্লেখ্য যে, ডায়মন্ড হারবার রোডের একাংশে এই উপাদানকে কাজে লাগিয়েই রাস্তা মেরামত করা সম্ভব হয়েছে। এমনকি, ওই মেরামত অংশের ওপর দিয়ে বড় পণ্যবাহী গাড়ি গেলেও কোনো ক্ষতি হয়নি। তাই, এবার এই উপাদান দিয়েই কলকাতা শহরের রাস্তা মেরামত করা শুরু হয়েছে। এই উদ্যোগ যদি সফল হয় সেক্ষেত্রে আগামী দিনে এই সংক্রান্ত একাধিক সমস্যার সমাধান হবে বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহলের একাংশ।
এদিকে, মেকানিক্যাল ম্যাস্টিফ দিয়ে বড় রাস্তা তৈরি করা হবে বলে আগেই জানিয়েছিলেন মেয়র। এদিন মেয়র জানিয়েছেন, “ওই মেশিনপত্র এখনও কলকাতা পুরসভার হাতে এসে পৌঁছয়নি। যতক্ষণ না ওই মেশিন কলকাতায় এসে কাজ শুরু করছে, ততক্ষণ এই বিষয়ে কোনো মন্তব্য করা যাবে না।” পাশাপাশি, মেয়র আরও বলেন, ”রাস্তা তৈরির মূল উপকরণ হল পিচ আর পাথরের টুকরো। কিন্ত এর সবচেয়ে বড় শত্রু হল জল। জলের সংস্পর্শে এলে পিচ আর পাথরের টুকরো আলাদা হয়ে যায়। এদিকে, আমাদের এখানে বৃষ্টি হয়। পাশাপাশি, মাটিও উর্বর। তাই সব মিলিয়ে রাস্তা খারাপ হয় থাকে। এর একটা সমাধানের জন্য রাস্তার বিভাগের ইঞ্জিনিয়াররা বিশেষ পদক্ষেপ গ্রহণ করছে প্লাস্টিকের সাহায্যে। এখনও পর্যন্ত যে পরীক্ষামূলক ব্যবহার করা হয়েছে তার ভালো ফলাফল সামনে এসেছে।”