নেশনহান্ট ডেস্ক : পেশা বলতে গ্রামে গ্রামে ঘুরে ঘুরে আচার বিক্রি করা। দিনের শেষে অতি কষ্টে আয় হয় দেড়শ টাকা মতো। যতদিন যাচ্ছিল ততই বাড়ছিল মুদির দোকানের ধার। দিন দিন সংসার চালানো অত্যন্ত কষ্টের হয়ে দাঁড়াচ্ছিল মুরারই থানার পলশা গ্রামের নূর আলম শেখের। অন্য কোনও উপায় না পেয়ে গত ১০ই নভেম্বর রোজগারের ১০০ টাকা থেকে ৬০ টাকা খরচ করে কিনে ফেলেন লটারি টিকিট।
সেই লটারি টিকিটই কয়েক ঘন্টার মধ্যে বদলে দিল তার ভাগ্য। লটারি জেতার খবর পেয়ে ভয়ে দুদিন ঘর থেকে বার হননি নূর। এই লটারি টিকিটের টাকা কীভাবে তিনি পাবেন সেই বিষয়ে কোনও ধারণা ছিল না তার। উপায় খুঁজে না পেয়ে মুরারই থানায় গত সোমবার থেকে ছেলেকে নিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন নূর।
আরোও পড়ুন : লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে ক্রেতারা,উপচে পড়া ভিড় সোনার দোকানে! ভাইফোঁটায় কততে বিকোচ্ছে হলুদ ধাতু ?
নূর বলেন, “চাটনি বিক্রি করে গত শুক্রবার বাড়ি ফিরছিলাম। বাঁশলৈ বাজারে একটা লটারি টিকিটের দোকান থেকে ৬০ টাকা দিয়ে টিকিট কিনি। বাড়ি ফিরে খাওয়া দাওয়া করে ঘুমিয়ে পড়ি। লটারি খেলার ফল প্রকাশ হয় দুপুরে একটায়। এরপর গ্রামে ছড়িয়ে পড়ে ওই লটারি বিক্রেতার বিক্রি করা একটি টিকিট কোটি টাকা জিতেছে। ঘুম ভাঙার পর মিলিয়ে দেখি আমার নম্বরটি কোটি টাকা জিতেছে।”
আরোও পড়ুন : এবার স্টারলিঙ্ককে কিস্তিমাত করবে Jio! নয়া চমক আনছে আম্বানি, গ্রাহকদের বিরাট লাভের সম্ভাবনা
নূরের প্রতিবেশীরা বলেছেন, অত্যন্ত কষ্টে নূর বৃদ্ধ বাবা-মা, স্ত্রী, এক ছেলে ও এক মেয়েকে নিয়ে সংসার চালান। বাড়ির অবস্থা এতই খারাপ যে ঝড় বৃষ্টির সময় অন্য লোকের বাড়িতে আশ্রয় নিতে হয়। লটারি জেতার পর নূর আরো জানিয়েছেন, টাকার অভাবে ছেলে মাধ্যমিক পরীক্ষা দিতে পারেনি। এখন একটি টোটোর গ্যারেজে কাজ করছে।
হাজার দারিদ্রতার মধ্যেও নূর মেয়ের পড়াশোনা চালিয়ে গেছেন। বর্তমানে তার মেয়ে একাদশ শ্রেণির ছাত্রী। লটারি টিকিটের টাকা হাতে পেলে নূর প্রথমে বাড়ি তৈরি করবেন বলে জানিয়েছেন। এছাড়াও তার ইচ্ছা আচার বেচা ছেড়ে অন্য কোনও ব্যবসা শুরু করবেন। সব মিলিয়ে বলা যায়, এখন এলাকায় চর্চার কেন্দ্রবিন্দুতে এই আচার বিক্রেতা।