নেশন হান্ট ডেস্ক: এবার সাফল্যের নয়া নজির স্থাপন করল চিত্তরঞ্জন লোকোমেটিভ ওয়ার্কস (Chittaranjan Locomotive Works)। সবথেকে উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, ফরাসি সংস্থাকে রীতিমতো টেক্কা দিয়েই অত্যাধুনিক রেল ইঞ্জিন তৈরি করে তাক লাগিয়ে দিয়েছে এই সংস্থা। ইতিমধ্যেই গত মঙ্গলবার যাত্রা শুরু করেছে চিত্তরঞ্জন লোকোমেটিভ ওয়ার্কসের তৈরি করা ১২ হাজার হর্সপাওয়ার ক্ষমতা সম্পন্ন রেল ইঞ্জিনটি। আর এই সাফল্যের ওপর ভর করেই এবার নয়া ইঞ্জিন তৈরির ক্ষেত্রে বড় বরাত চাইছে এই সংস্থার শ্রমিকরা।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর “গতিশক্তি” প্রকল্পকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পরীক্ষামূলকভাবে ৯ টি ইঞ্জিন তৈরির বরাত দেওয়া হয় দেশের সর্ববৃহৎ রেল ইঞ্জিন কারখানাকে। সেই চ্যালেঞ্জকেই সাফল্যের সাথে উত্তীর্ণ করে প্রথম ইঞ্জিনটি তার যাত্রা শুরু করল। জানা গিয়েছে যে, WAG9 টুইন লোকোমোটিভ এই ইঞ্জিনটি ১০০ থেকে ১২০ কিমি গতিতে ৪৫ থেকে ৫০ টি ওয়াগেন যুক্ত রেককে টেনে নিয়ে যেতে সক্ষম।
মূলত, রেলের প্রস্তাবিত ফ্রেট করিডোরগুলির বিষয়কে সামনে রেখেই সম্পূর্ণ দেশীয় প্রযুক্তির ওপর ভর করে এই ইঞ্জিনটি তৈরি করা হয়েছে। আর তারপরেই এহেন সাফল্যে খুশি হয়েছে শ্রমিক সংগঠনগুলি। শুধু তাই নয়, তাদের তরফ থেকে দাবি তোলা হচ্ছে যে এবার এই এক একটি ইঞ্জিনের জন্য কয়েক কোটি টাকা বেসরকারি সংস্থাকে দেওয়ার আর কোনো প্রয়োজন নেই। বরং এই ইঞ্জিন তৈরির বরাত চিত্তরঞ্জন লোকোমেটিভ ওয়ার্কসকেই দেওয়া উচিত। এরফলে কেন্দ্রের কয়েকশো কোটি টাকা সাশ্রয় হওয়ার পাশাপাশি CLW- তেও কাজের ব্যস্ততা বাড়বে।
আরও পড়ুন: দীপাবলির পরেই Airtel-এর কোটি কোটি গ্রাহক পাবেন দুঃসংবাদ! অন্যদিকে স্বস্তির খবর শোনাল Jio
উল্লেখ্য যে, গত মঙ্গলবার চিত্তরঞ্জন লোকোমেটিভ ওয়ার্কসের GM দেবীপ্রসাদ দাস সবুজ পতাকা নেড়ে এই ইঞ্জিনের যাত্রার সূচনা করেন। এই প্রসঙ্গে, CLW-এর জনসংযোগ আধিকারিক অমিত আগরওয়াল জানিয়েছেন, “আমরা এইরকম ৯ টি সেট তৈরি করব। ইতিমধ্যেই আমাদের শ্রমিক এবং আধিকারিকরা এই ইঞ্জিন প্রস্তুত করতে সক্ষম হয়েছেন।”
আরও পড়ুন: ভারতের প্ৰথম স্কুল কোনটি? ৯৯ শতাংশ ব্যক্তি জানেন না এই উত্তর
জানিয়ে রাখি, স্বাধীনতার পরেই বাংলায় গড়ে ওঠা দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাসের নামাঙ্কিত এই রেল ইঞ্জিন কারখানাটি স্টিম ইঞ্জিন থেকে শুরু করে ডিজেল ইঞ্জিন এবং ইলেকট্রিক ইঞ্জিন থেকে বর্তমানের উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন ইলেকট্রিক ইঞ্জিন তৈরি করেছে। তবে, এখনকার ৯ হাজার এবং ১২ হাজার হর্সপাওয়ারের ইঞ্জিন সরবরাহের বরাত এই ইঞ্জিন কারখানাকে না দিয়ে একটি বেসরকারি ফরাসি সংস্থাকে দেওয়া হয়। আর তারপরেই CLW-এর শ্রমিকদের মধ্যে ক্ষোভের আবহ তৈরি হয়।
পাশাপাশি তারা, কার্যত চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে জানিয়ে দেয় যে, তারা ওই একই মানে ইঞ্জিন বানাতে সক্ষম। তারপরেই পরীক্ষামূলকভাবে ৯ টি ইঞ্জিন তৈরির বরাত দেওয়া হয় CLW-কে। এই প্রসঙ্গে সিটু অনুমোদিত চিত্তরঞ্জন লেবার ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক রাজীব গুপ্ত জানিয়েছেন, “আমরা সাফল্যের সঙ্গে ১২ হাজার হর্সপাওয়ারের আধুনিক ইঞ্জিন তৈরি করে সেটি চালাতে সক্ষম হয়েছি। আমরাই যখন ইঞ্জিন তৈরি করতে পারছি তখন কেন আর বিদেশ সংস্থার কাছ থেকে এই ইঞ্জিন কেনা হবে? ইতিমধ্যেই আমরা এই বিষয়ে বুধবার প্রতিটি ওয়ার্কশপে ডেপুটেশন দিয়ে স্মারকলিপি জমা করেছি।”