নেশনহান্ট ডেস্ক: কথায় বলে কারোর দিনই সবসময় সমান যায় না। একথা এখন মর্মে মর্মে বুঝতে পারছেন এক সময়ের নজরকাড়া বিত্তশালী ব্যক্তি অনিল আম্বানী। আজ থেকে বছর দশ বছর আগেও মুকেশ নয়– সবার আগে আসত অনিল আম্বানির (Anil Ambani) নাম। কিন্ত, সময়ের চাকা গড়িয়েছে।
কালের নিয়মে শুধু যে ব্যাঙ্ক ব্যালেন্স কমেছে তাই নয়, একসময় দেনা মেটাতেও নিতে হয়েছে গয়না বিক্রির সিদ্ধান্ত। বর্তমানে আর্থিকভাবে খুবই দুর্দশাগ্রস্থ অনিল আম্বানিকে নিয়ে এখন প্রশ্ন উঠেছে এক সময় দাদার থেকেও ধনী থাকা অনিল আম্বানি কিভাবে পিছিয়ে পড়লেন ব্যবসার দিক দিয়ে? সেই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গেলে অবশ্য কিছুটা ফিরে তাকাতে হবে।
আরোও পড়ুন : খুবই কম খরচে সফর! নির্জনতায় মোড়া এ যেন এক পাহাড়ি স্বর্গ, এখানে গেলে দু’দিনেই এক্কেবারে ফ্রেশ
আসলে দুই ভাইয়ের মধ্যে সমানভাবে ব্যবসা ভাগ হয়ে যায় ধীরুভাই আম্বানির (Dhirubhai Ambani) মৃত্যুর পর। পিতার মৃত্যুর পর দুই ভাই মিলে রিলায়েন্স ব্যবসা প্রসারিত করবে আশা করা হলেও তেমনটা হয়নি। ধীরু ভাইয়ের মৃত্যুর দু বছরের মধ্যে দুই ভাইয়ের তিক্ততা প্রকাশ্যে আসে। এই সমস্যার সমাধান করেন তার মা কোকিলাবেন (Kokilaben)।
কোকিলাবেন তার দুই ছেলেকে সমস্ত সম্পত্তি ভাগ করে দেন। তেল শোধনাগর ও পেট্রোকেমিক্যাল ব্যবসা মুকেশ আম্বানির হাতে তুলে দেন, আর অন্যদিকে অনিল টেলিকম, ফিন্যান্স ও এনার্জি ইউনিট হাতে পান। এরপর দুই ভাই একে অপরের সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা না করার চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। বলা হয় যে মুকেশ টেলিকম ব্যবসায় পা রাখবেন না, অন্যদিকে অনিল তেল শোধনাগার ও পেট্রোকেমিক্যাল থেকে দূরে থাকবেন।
আরোও পড়ুন : মাত্র ১১ দিনেই বাড়ল ১ লাখ ‘ইউজার’! পুজোর মরশুমে নজরকাড়া সাফল্য ‘যাত্রীসাথী’ অ্যাপের
প্রথমদিকে অনিল আম্বানির ব্যবসা দ্রুত গতিতে এগতে থাকলেও একের পর এক বিনিয়োগে মুখ থুবড়ে পড়েছিলেন অনিল। চিনের ব্যাঙ্ক থেকে মোটা অঙ্কের ঋণ নিয়েছিল অনিলের সংস্থা রিলায়্যান্স কমিউনিকেশনস লিমিটেড। অভিযোগ, ঋণ শোধ করে দেবেন বলে ব্যক্তিগত ভাবে গ্যারান্টি দিলেও প্রথম দিকে কয়েক দফায় ঋণের কিস্তিও জমা দিয়েছিল তাঁর সংস্থা। কিন্তু আচমকাই তা বন্ধ হয়ে যায়।
দক্ষিণ আফ্রিকার একটি সংস্থায় ১৬ হাজার ৬৮২ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছিলেন অনিল। কিন্তু ব্যর্থ হন। শুধু তাই নয়, সেই সময় অনিলের বিলাসবহুল জীবনযাপনও নজরকাড়া ছিল। ফলে, সব মিলিয়েই অনিলের ঘাড়ে বাড়ছিল দেনার বোঝা। যা মেটাতে হিমশিম খেতে হয় তাঁকে। ২০২০ সালে অনিলকে দেউলিয়া ঘোষণা করা হলে আইনি মামলায় লড়ার টাকা জোগাড় করতে বাড়ির গয়নাও বিক্রি করতে হয়েছিল তাঁকে।