নেশনহান্ট ডেস্ক : হেমন্ত বাবু তার গানে গানে বলেছিলেন “বন্ধু তোমার পথের সাথীকে চিনে নিও…।” আসলে পথের সাথীকে চেনার জন্য প্রয়োজন হয় পথের। আবার সবার সাথী সবাই হতেও পারে না। শিক্ষকের চিরকালীন সাথী তার পড়ুয়ারা। তাই বাংলার এই শিক্ষক পড়ুয়াদের সন্ধানে চার দেয়ালের ঘর থেকে বেরিয়ে এসেছেন পথে। খোলা রাস্তায় এই শিক্ষকের শিক্ষকতায় ভরে ওঠে আকাশ-বাতাস।
পড়ুয়াদের কবিতার ছন্দে নেচে ওঠে নাম না জানা অসংখ্য পাখি। শুধু প্রথাগত শিক্ষা নয়, এই মাস্টার আদিবাসী সম্প্রদায়ের শিশুদের দিচ্ছেন জীবনের পাঠ। এবার ইউনেস্কোর পক্ষ থেকে বাংলার এই মাস্টারকে সেরা ১০ শিক্ষকের তালিকায় স্থান দেওয়া হল। ইউনেস্কোর গ্লোবাল টিচার অ্যাওয়ার্ড বাংলার এই শিক্ষক এবার পেতে চলেছেন একমাত্র ভারতীয় হিসেবে।
আরোও পড়ুন : ১০ টাকার মাল বিক্রি ১০০ টাকায়, সারা বছরই থাকে বিপুল চাহিদা! এই ব্যবসায় অল্পদিনেই হবেন লাখপতি
দীপনারায়ণ নায়েক পরিচিত ‘রাস্তার মাস্টার’ হিসেবে। প্যারিসে ইউনেস্কোর জেনারেল অ্যাসেম্বলিতে বিশ্বের সেরা শিক্ষকের নাম ঘোষণা করা হবে আগামী ৮ নভেম্বর। সেখানেই সেরা ১০ শিক্ষকের তালিকায় মনোনয়ন পেয়েছেন দীপনারায়ন। জামুড়িয়ার আদিবাসী অধ্যুষিত তিলকামাঝি গ্রামের আদিবাসী সম্প্রদায়ের সন্তানদের নিয়ে রোজ তার স্কুল বসে রাস্তায়।
আরোও পড়ুন : প্রতীক্ষার অবসান, শীঘ্রই আসছে বন্দে ভারত স্লিপার! চলবে বাংলার এই জনপ্রিয় রুটে
বাড়ির নিকোনো দেওয়াল রঙ করে তৈরি করেছেন বোর্ড। রাস্তায় আসন পেতে বসেই একে একে শিক্ষা জগতের পথ অতিক্রম করছেন পড়ুয়ারা। দীপনারায়ণ বলেছেন, প্রথমে পথ চলা শুরু হয়েছিল এক দুজনকে নিয়ে। এরপর বাড়তে বাড়তে বর্তমানে শতাধিক হয়েছে পড়ুয়ার সংখ্যা। যুক্ত হচ্ছে নতুন নতুন ছাত্র-ছাত্রী।
দীপনারায়ণ বলছেন, আদিবাসী শিশুদের পড়াশোনা শেখাতে গিয়ে তিনি লক্ষ্য করেছেন তার কাছে যারা পড়তে আসছে তারা অধিকাংশই নিরক্ষর পরিবারের। তাই তিনি শিশুদের পাশাপাশি পড়াতে শুরু করেন তাদের অভিভাবকদেরও। সব মিলিয়ে বলা যায়, দীপনারায়ণের হাত ধরে শুধু যে হাজার হাজার ছেলেমেয়ে শিক্ষিত হচ্ছে তাই নয়, গড়ে উঠছে তাদের মূল্যবোধ।