নেশনহান্ট ডেস্ক : কথায় বলে বাঙালির বারো মাসে তেরো পার্বণ। আবার এই পার্বণগুলোর মধ্যে রয়েছে একাধিক পুজো। সাধারণত এই পুজোর সমস্ত রীতি ও আচার পালন করেন মহিলারাই। ঠাকুর মশাইয়ের সাথে আনুষঙ্গিক কাজ করা থেকে শুরু করে অন্যান্য উপাচার, পুজোর সবকিছুতেই মহিলাদের গুরুত্ব অপরিসীম।
কিন্তু বাংলার এমন একটি জায়গা রয়েছে যেখানে এই চিত্রটা খানিকটা ব্যতিক্রমী। কৃষ্ণনগরের এই জগদ্ধাত্রী পুজোয় দেবীকে বরণ করা থেকে শুরু করে অন্যান্য আচার পালন, সবটাই করেন পুরুষেরা। তবে তারা পুরুষ বেশে নয়, এইসব কাজ করে থাকেন মহিলা বেশে। এখানকার মহিলারা জগদ্ধাত্রী পূজার আগের দিন পুরুষদের পরিয়ে দেন শাড়ি।
আরোও পড়ুন : এবার খেলা দেখাতে আসছে শীত! দক্ষিণবঙ্গের এই জেলাগুলির তাপমাত্রা নামতে পারে ১৫ ডিগ্রির নিচে
এরপর অত্যন্ত নিষ্ঠার সাথে পুরুষরাই সমস্ত নিয়ম পালন করেন। বিশেষ এই ধরনের পুজো প্রচলিত হয়ে আছে কৃষ্ণনগরের মালোপাড়ায়। এখানকার ছেলেরা শাড়ি পরে পুজোর জন্য জল ভরতে যান। এখানে পূজিত হন দেবী জলশ্বেরী। তবে এই পুজার যে আকর্ষণ শুধু পুরুষদের নারী বেশ ধারণা সেটা কিন্তু নয়।
আরোও পড়ুন : দুর্দান্ত খবর রেলের! শিয়ালদার ৩টি লেডিস স্পেশালে আসছে AC কোচ; দেখুন ভাড়া, শুরুর দিনক্ষণ
এখানকার জগদ্ধাত্রী পুজোর আরো একটি আকর্ষণ হল ধুনো পোড়ানো। পুজোর সময় এখানে কেউ মাথায় আবার কেউ দুহাতে ধুনো পোড়ান। অনেকেই মনে করেন বাংলায় জগদ্ধাত্রী পুজোর প্রচলন হয় নদীয়ার রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের হাত ধরে। নবাব আলিবর্দি খাঁ একবার কৃষ্ণচন্দ্রের কাছ থেকে ১২ লক্ষ টাকা চান।
কিন্তু সেই টাকা দিতে না পারায় রাজা কৃষ্ণচন্দ্রকে বন্দি করা হয়। যে সময় রাজা কৃষ্ণচন্দ্র বন্দি ছিলেন সেই সময় ছিল দুর্গাপুজো। বন্দিদশা থেকে মুক্ত হওয়ার পর তিনি যখন ফিরছিলেন তখন তিনি দুর্গাপুজোর ভাসানের ঢাক শুনতে পান। তখন তিনি বুঝতে পারেন দুর্গাপুজোর সময় পেরিয়ে গেছে। এরপর সেই রাতেই রাজা কৃষ্ণচন্দ্রকে দেবী স্বপ্নে জগদ্ধাত্রী পুজো করার নির্দেশ দেন।
মনে করা হয় সেই থেকেই প্রচলন শুরু হয় জগদ্ধাত্রী পুজোর। এরপর ধীরে ধীরে কৃষ্ণনগর ও অন্যান্য জায়গায় জগদ্ধাত্রী পুজোর প্রচলন শুরু হয়। কৃষ্ণনগরের এই জলেশ্বরী দেবীর পুজো অন্যতম প্রাচীন একটি পুজো। এই পুজোকে ঘিরে ভিড় জমান আট থেকে আশি। এই পুজো দেখতেই বাংলার বিভিন্ন জায়গা থেকে মানুষেরা ছুটেও আসেন।