নেশনহান্ট ডেস্ক: এক দুই তিন নয়, দীর্ঘ ২৪ বছর পর হারিয়ে যাওয়া ভবঘুরে সেনা জওয়ানকে খুঁজে পেল তার পরিবার। ওই ভবঘুরে গত কয়েক মাস ধরে ছিলেন ব্যারাকপুর স্টেশন চত্বর সংলগ্ন এলাকায়। এই ভবঘুরের বৃদ্ধ একটা সময় কাজ করতেন ইন্ডিয়ান আর্মিতে। পশ্চিমবঙ্গ হেম রেডিও ক্লাবের উদ্যোগে ফের একবার নিজের ঘর ফিরে পেলেন এই সেনা জওয়ান।
ব্যারাকপুর স্টেশন সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দারা বলছেন, এই ভবঘুরেকে গত কয়েক মাস ধরে স্টেশনে সংলগ্ন বিভিন্ন এলাকায় দেখা যেত। হেম রেডিও ক্লাবের অন্যতম সদস্য অম্বরিশ নাগ বিশ্বাসের নজরে আসেন এই বৃদ্ধ। একটা সময় বিকালে এই বৃদ্ধকে চা খাওয়াতেনর অম্বরিশ বাবু। চা খাওয়ানো শেষ হলে অম্বরিশ বাবুকে স্যালুট করতেন এই বৃদ্ধ।
আরোও পড়ুন : লাগে ১০৮ মাথার খুলি, সঙ্গে মদ-মাংস! মহাশ্মশানে ডাকিনী-যোগিনী নিয়েই জেগে ওঠেন এই মা কালী
আদতে এই বৃদ্ধকে আর পাঁচটা ভবঘুরের মতো দেখতে হলেও, তার ভঙ্গিমা কিছুটা আলাদা ছিল। এই বৃদ্ধর স্যালুট করার ভঙ্গি খানিকটা অবাক করে অম্বরিশ বাবুকে। এরপরও অম্বরিশ বাবু খোঁজখবর শুরু করেন। কিন্তু এই বৃদ্ধর পারিবারিক পরিচয় কিছুতেই পাওয়া যাচ্ছিল না। এরপর অম্বরিশ বাবুরা কিছুটা কৌশল অবলম্বন করে ওই বৃদ্ধর থেকে কিছু তথ্য পান।
সেই তথ্য পাওয়ার পর যোগাযোগ করা হয় উত্তর প্রদেশের রেডিও ক্লাবের সদস্যদের সাথে। এরপর সন্ধান পাওয়া যায় ওই বৃদ্ধের পরিবারের। পরিবারের সন্ধান পাওয়া গেলে জানা যায় যে ওই বৃদ্ধ ছিলেন ইন্ডিয়ান আর্মির একজন সেনা। বাবা রাধে চৌরাশিয়া নামের ওই বৃদ্ধ ১৯৯৯ সালের ৩রা জানুয়ারি আসামে কর্মরত অবস্থায় থেকে ছুটিতে বাড়ি আসার কথা জানিয়ে বের হয়ে যান কর্মস্থল থেকে।
আরোও পড়ুন : ধস বাজারে! বিক্রি হয়ে যাচ্ছে আদানির কোম্পানি, হঠাৎ কী হল ভারতীয় ধনকুবেরের?
এরপর ৫ তারিখ বাড়ি ফেরার কথা থাকলেও তিনি ফেরেননি। এরপর অনেক চেষ্টা করেও সন্ধান পাওয়া যায়নি এই বৃদ্ধর। মৃত ভেবে দীর্ঘ সাত বছর পর ওই বৃদ্ধর শ্রাদ্ধ শান্তিও করে পরিবার। পরিবারের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী এই বৃদ্ধের বর্তমান বয়স ৭৫ এর উপরে। দেড় বছর আগে বৃদ্ধর স্ত্রী গত হয়েছেন। দুই মেয়ের মধ্যে এক মেয়েও গত হয়েছেন ও আরও এক মেয়ে অসুস্থ।
ছেলে রাজকুমার চৌরাশিয়া কর্মরত বিহারের এগ্রিকালচার ডিপার্টমেন্টে। এই ভবঘুরে বৃদ্ধর পরিচয় জানার পর এখন রীতিমতো তাজ্জব বনে গেছেন ব্যারাকপুর সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দারা। বলা বাহুল্য, ঘটনাটিকে কেন্দ্র করে গোটা ব্যারাকপুরে রীতিমতো শোরগোল পড়ে যায়। এতগুলো বছর পর পরিবারের সদস্যকে ফিরে পেয়ে স্বাভাবিকভাবেই খুশি সবাই।